ছবি- সংগৃহীত
তখন আষাঢ় মাস। বৃষ্টি শুরু হয় নি। আমাদের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। নিরানন্দ এক দুপুরে সবাই যখন ভাতঘুম দিচ্ছে, তখন আমি বই নিয়ে বসেছি। এমন সময় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এলো অবন্তী। দূর সম্পর্কের বোন। আমি পড়ার টেবিলে দেখে সে আমার বিছানায় বসলো। টুকটাক কথা বার্তা হলো। কেমন আছি। বাড়ির লোকজন কে কোথায়। তখন বাড়িতে কেউ ছিল না।
আর অবন্তীও চলে যাচ্ছিল না। ভাবলাম, একে কি করে তাড়ানো যায়। মাথায় এলো ওর বিএফ সম্পর্কে আলোচনা করি। ব্যস্। বললাম, প্রেম করিস কি?.
না।
তবে এই না বলতে যেন একটু লজ্জা পেল।
কি বলিস, এত সুন্দর তুই, আর প্রেম করিস না, আমার তো বিশ্বাস হয় না।
না, করি না। তবে আমার পিসতুতো ভাই আমাকে প্রপোজ করেছিল। আমি কিছু বলিনি।
আমি তাকে ঠোকর দেওয়ার জন্য বললাম, আমাকে বিয়ে করবি। যদি রাজি থাকিস, তাহলে বল। তোদের বাড়িতে প্রস্তাব পাঠাই।
এবার সে আমার দিকে আর যেন তাকাতে পারছে না। বুঝতে পারছি, এ পর্যন্ত এরকম খোলামেলা আলাপ তার সাথে কেউ করে নি।
কি রে কিছু বল।
কি বলবো।
আরে আমাকে তোর পছন্দ কিনা, এটা অন্তত বল।
জানি না।
জানি না বললে তো হবে না। আচ্ছা আমার দিকে তাকা।
কিন্তু না, সে আমার দিকে তাকাতে চাচ্ছে না।
আমি চেয়ার থেকে উঠে তার কাছে গেলাম। দু হাত দিয়ে তার মাথা উচু করে ধরলাম। লজ্জায় তার মুখে রক্তিম আভা ফুটে উঠেছে। তার ওষ্ঠ অধর যেন কাঁপছে। আর তার দু চোখ যেন আমাকে তার দিকে টানছে। আমি ফিসফিস করে তাকে বললাম, একটা চুমু দেই।
এবার সে তার দু চোখ বন্ধ করলো। আমিও তার উষ্ণ ঠোঁটে এঁকে দিলাম আমার প্রথম চুম্বন।
এদিকে সারা শরীরে সেই চুম্বনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিল। নিম্নাংশে ফোঁস করে উঠার আগেই তাকে ছেড়ে দিয়ে আবার চেয়ারে বসলাম।
বললাম, রাগ করলি।
না, তবে
তবে কি?
আমি এটা আশা করি নাই।
তাই, কি আশা করছিলি।
গল্প বাড়ছে, তবুও অবন্তী নড়ছে না। বললাম, আরেকবার দিই।
না।
না কি?
আর না।
আর না কি?
আমি চেয়ার থেকে উঠতে চাচ্ছি, এটা বুঝতে পেরেছে যখন ঠিক তখনি অবন্তী এক প্রকার ঝড়ের বেগে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। আমি নিজের মনে হাসতে থাকি। যাক, অবশেষে আমি তাকে তাড়াতে পেরেছি। আমার সামনে পড়ার টেবিলে মেলে রাখা বইয়ের পাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার তরী কবিতা, কিন্তু এ মুহুর্তে আমি কোনো লেখা দেখতে পাচ্ছি না, দেখতে পাচ্ছি কম্পমান এক জোড়া ঠোঁট।