রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

একটি সতর্কবার্তা, মিডিয়া ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ

অঞ্জন আচার্য

প্রকাশিত: ২১:০৭, ২২ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ১০:৫৬, ২৬ নভেম্বর ২০২২

একটি সতর্কবার্তা, মিডিয়া ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ

অঞ্জন আচার্য

গত ১৩ নভেম্বর রোববার হঠাৎ ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন মা। শরীরের সোডিয়াম কমে যায়। ডাক্তার বলেন দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, শরীরে সেলাইন পুশ করাতে হবে। সময়ক্ষেপণ না করে বাসার কাছাকাছি ধানমন্ডির শংকরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করাই। ৩ দিনে হাসপাতালের বিল হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এই সঙ্কটকালে টাকার অংকটা বড়ই। তারপরেও কিছু করার নেই। নিরুপায়। আপন ভাই ও মামাতো ভাইয়েরা মিলে টাকার বন্দোবস্ত করতে থাকি। হঠাৎ মনে হলো—আচ্ছা, ইবনে সিনার এমডির কাছে অনুরোধ করলে কেমন হয়? মানবিক জায়গা থেকে হয়তো কিছু টাকা ছাড় পাওয়া গেলে কষ্ট খানিকটা লাঘব হয়। সেই ভাবনা থেকে ইন্টারনেটে সার্চ করতে থাকি। একসময় প্রফেসর ড. এ. কে. এম. সদরুল ইসলামের প্রোফাইল খুঁজে পাই। সঙ্গে মোবাইল নম্বরও পেলাম। কল দিলাম। ট্রু-কলারে নাম ভেসে এলো ‘সদরুল ইসলাম বুয়েট’। নম্বরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আর প্রশ্ন ওঠে না। কারণ ড. সদরুল ইসলাম বুয়েটের প্রাক্তন অধ্যাপক। কথা হলো। অনুরোধ করলাম। মায়ের বিস্তারিত উনাকে বলি। তিনি বললেন, “দেখছি কী করা যায়।” এভাবে দুইবার কথা হয়। কয়েক মিনিট পর ওই নম্বর (01819149326) থেকে কল আসে। আমি আশ্বস্ত হই। এবার বুঝি ইতিবাচক কিছু আসবে। অপর পাশ থেকে আমাকে বলা হয়, “দেখেন, আমি আপনাকে সহযোগিতা করতে পারি। তবে আমাকেও আপনার সহযোগিতা করতে হবে।” আমি বললাম, “কী ধরনের সহযোগিতা স্যার?” তিনি বললেন, “আমাকে ৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন, আমি ১৫ হাজার টাকা ডিসকাউন্ট করে দেবো।” সাথে সাথে মাথায় স্টাইক করে। আর যাই হোক, ইবনে সিনার এমডি অন্তত আমার কাছে বিকাশে টাকা চাইবেন না। সাথে সাথে আমি গেলাম হাসপাতালের মিডিয়া উইংয়ে। নিজের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলাম, “প্রফেসর সদরুল ইসলাম কোথায় বসেন? আমি উনার সঙ্গে একবার দেখা করতে চাই।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়, “সদরুল স্যার তো দেশে নেই, জার্মানে গেছেন। ফিরবেন আগামী সপ্তাহে।”

এখন প্রশ্ন হলো, ট্রু-কলারে ওই নাম তাহলে ভাসলো কেন? তবে কি নম্বরটি ক্লোন করা হয়েছে? নাকি ভুয়া একটি নম্বর ড. সদরুল ইসলামের নামে ট্রু-কলারে সেইভ করা হয়েছে? না-জানি কতশত মানুষ ওই নম্বরে কল দিয়ে সাহায্য চেয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। এত ধকলের মধ্যে বিষয়টি আর প্রশাসনকে জানাতে পারিনি। আজ জানালাম।

আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডের তালিকায় সাংবাদিক বন্ধু ও র‌্যাব-পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থার বন্ধুরা বিষয়টি একটু খতিয়ে দেখবেন। অন্তত একটি মানুষকেও ওই প্রতারকের হাত থেকে বাঁচান।