শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, পৌষ ১২ ১৪৩১

বাঙালি টাইম

জুয়েল স্টিফেন পালমা

প্রকাশিত: ২২:০৭, ৭ অক্টোবর ২০২২

বাঙালি টাইম

জুয়েল স্টিফেন পালমা

এটা মনে হয় প্রয়োগ হতো বাংলাদেশ রেলওয়ের ক্ষেত্রে ট্রেনের সময় নিয়ে, তিনটার ট্রেন কয়টায় আসবে খোদ স্টেশন মাস্টার ও জানতো না বা জানলেও বলতো না ।সেখান থেকেই মনে হয় প্রচলিত হতে হতে একেবারে আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গেছে বাঙালি টাইম।

কিন্তু কখন ব্যবহার হয় এই বাঙালি টাইম ?আমাদের নিত্য দিনের কর্মকান্ড শুরু হয় হাতের ঘড়ির কাটা দেখে , ঘুম থেকে ওঠা, স্কুল, কলেজ , অফিস সবকিছুই চলে ঘড়ির কাটায় চলে তাহলে বাঙালি টাইম কোথায় ?আসেন পরিচিত হই বাঙালি টাইমের সাথে, আপনি কোন অনুষ্টানের আয়োজক তাহলে আপনাকে আমার আর বলতে হবে না আপনি এতক্ষনে বুঝে গেছেন, আপনি আপনার বাসায় কোন পারিবারিক অনুষ্টানের আয়োজন করেছেন তাহলেও আপনার অভিজ্ঞতা হয়েছে বাঙালি টাইমের ।

যারা অনুষ্টানের  আয়োজক হয় তারা হাড়ে হাড়ে টের পায় বাঙালি টাইমের কি  মর্ম , অনুষ্টানের প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি অনুষ্টানে উপস্হিত কিন্তু আমরা কেউ নেই, বুঝেন এখন আয়োজকের অবস্থাটা , একবার অনুমান করে দেখেন আপনি সেখানে থাকলে কেমন লাগতো , অথবা এমন পরিস্থিতির শিকার আপনিও হয়েছেন।

আপনি বাসায় অতিথি দাওয়াত দিয়েছেন  দুপুরে কিন্তু অতিথি আসা শুরু করবে ২.৩০শের পরে, আপনি রান্না করেছেন দুপুরের খাবার কিন্তু পরিবেশন করবেন বিকেলের খাবার এখন এই খাবার কতক্ষন আপনি গরম রাখতে পারবেন ?কিন্তু যিনি সবার পরে এসেছেন তিনিই আবার আপনাকে বলবে খাবার এত ঠান্ডা কেন ? তখন আপনার ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে হাসা ছাড়া আর উপায় কি ?

আবার কেউ কেউ আপনাকে বাসায় থেকে ফোন দিবে আচ্ছা অনুষ্টানে কি লোকজন সবাই চলে এসেছে ? আরে বাবা আপনি নিজে না এসে অন্যের খবর নিয়ে কি লাভ ? আপনি আপনার সময়মত চলে আসেন আর অনুষ্টানের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলুন ।আবার এমনও দেখা যায় কিছু কিছু অনুষ্টানের আয়োজকদেরই সময়মত অনুষ্টানে উপস্হিত নাই, সকল অতিথি অনুষ্টানে হাজির কিন্তু আয়োজক কই? তখন বলতে শুনা যায় বাঙালি টাইম ।

বাংলাদেশে যখন বাঙালি টাইম মতো কিছু করে সেটা মানা যায়,কিন্তু বিদেশে আমরা যখন বাঙালি টাইমে কিছু করি তাহলে কতটা সমস্যার পড়তে হয় সেটা সবাই আমরা কমবেশি জানি। কিন্তু কেউ আমরা এটার প্রতিকার করার কোন ইচ্ছায় নাই, মনে মনে ভাবে আপনি আমার অনুষ্টানে  দেরি করে এসেছেন আমিও আপনার অনুষ্টানে দেরি করে যাবো ।আর এভাবেই দিনের পর দিন বাঙালি টাইমের প্রচলন হয়ে যাচ্ছে ।

আমরা বিদেশে যারা বিভিন্ন ভাবে কমিউনিটির অনুষ্টান গুলির আয়োজকদের সাথে থাকি তখন বুঝি বাঙালি টাইমের প্যারা, বিদেশী কোন অতিথি দাওয়াত দিলে তারা সময়মত উপস্হিত হয়ে যায় আর আমরা তখন হয়তো বাসায় তৈরি হচ্ছি এখন আয়োজক বেচারা না পারছে খাবার পরিবেশন করতে না পারছে অনুষ্টান শুরু করতে ।

বাঙ্গালী টাইমের সুফল কামনায় ___