সোমবার ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, পৌষ ১৬ ১৪৩১

কর্মোভিজ্ঞতায় আমার দেখা ফাঃ বেঞ্জামিন

এডুয়ার্ড প্রলয় রোজারিও

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ১৫ এপ্রিল ২০২২

কর্মোভিজ্ঞতায় আমার দেখা ফাঃ বেঞ্জামিন

এডুয়ার্ড প্রলয় রোজারিও

আজকের পালকীয় যুব কমিশন যে সব ভিত-এর উপর দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে নির্দ্বিধায় সবচেয়ে শক্ত ও প্রধান ভিতটির নাম-ই হলো প্রয়াত ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা, সিএসসি।  প্রয়াত ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা, সিএসসি-এর সাথে এই সুযোগে আমি ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করতে চাই প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস গমেজ, প্রয়াত ব্রাদার জন রোজারিও, সিএসসি, প্রয়াত সিঃ মেরী পেট্রা, এসএমআরএ, প্রয়াত সিস্টার সিসিলিয়া, আরএনডিএম, প্রয়াত স্বপন খ্রীষ্টফার পিউরীফকেশন, প্রয়াত ফাদার বেনেডিক্ট এম. কস্তা, সিএসসি এবং প্রয়াত ফাদার স্ট্যানিসলাস বকুল রোজারিও, সিএসসিকে।


বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী’র পালকীয় যুব কমিশনের তৎকালীন নাম ছিল কাথলিক যুব সেবাদল। একটা সময় কাথলিক যুব সেবাদলকে আমাদের কাথলিক অনেক সংগঠনই সহজভাবে নেয়নি, বেশীরভাগ ধর্মপল্লী ও মিশনারী স্কুল-ও মনেপ্রাণে সহযোগিতা করেন নি। অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করে সফল কাথলিক যুব সেবাদল- যা আজ পালকীয় যুব কমিশন।প্রয়াত ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা, সিএসসি-র সাথে আমার অভিজ্ঞতা সহভাগিতা ওয়াইসিএস, কাথলিক যুব সেবাদল এবং বিসিএসএম-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।


ঢাকা শহরের যে চারটি স্কুলে ওয়াইসিএ-র যাত্রা শুরু হয়, তার-ই একটি সেন্ট গ্রেগরীজ হাই স্কুলে ১৯৮৫ সালে- আমি তখন ক্লাশ নাইনের ছাত্র। স্কুলের বিভিন্ন কার্যক্রমে মাত্রই নেতৃত্বে আসতে শুরু করেছি। সে সময়ে প্রয়াত ব্রাদার চার্লস গার্ণিয়ে, সিএসসি, সানি’দা, ভিক্টর’দা ও এলভিস’দার উৎসাহে ওয়াইসিএ আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ি। কাথলিক যুব সেবাদলের সমন্বয়কারী থাকায় পদাধিকারবলে ওয়াইসিএ-এর জাতীয় চ্যাপলেইন ছিলেন ফাদার বেঞ্জামিন। উনাকে চিনতাম আগে থেকেই, কিন্তু ওয়াইসিএ-এর কল্যাণে জানতে শুরু করি ১৯৮৫ সাল থেকে। আমাদের বিভিন্ন সেমিনারে উনি মূলতঃ মিশা উৎসর্গ করতেন এবং মিশার উপদেশে খ্রীষ্টীয় জীবন গঠন, খ্রীষ্টীয় নেতৃত্ব, খ্রীষ্টান ছাত্র হিসাবে আমাদের আরো কি কি করণীয়, সময়ের গড্ডালিকা প্রবাহে আমরা যেন গা ভাসিয়ে না দিই, ইত্যাদি ব্যাপারে কথা বলতেন। চা বিরতির সময় কথা বলার জন্য আমাদের সময় দিতেন।


ফাদার বেঞ্জামিন আক্ষরিক অর্থেই ভালো ও দক্ষ সমন্বয়কারী ছিলেন। সবাইকে নিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে পছন্দ করতেন।ওয়াইসিএ-এর উপযোগী বিভিন্ন শিক্ষণের জন্য একটি উপযুক্ত দল তিনি সমন্বয় করতেন। তাঁর দলের প্রশিক্ষকরাই মূলতঃ বিভিন্ন বিষয়ে সেশন পরিচালনা করতেন। যতটুকু মনে পড়ে- সিস্টার পলিন গমেজ, সিএসসি, সিস্টার পলিন নাইডু, সানি’দা, ভিক্টর যোয়াকিম গমেজ, ঝর্ণা বার্ণাডেট পিউরীফিকেশন, শিখা ডায়না হালদার, পরবর্তীতে সিস্টার মেরী দিপ্তী, এসএমআরএ, ফাদার বেনেডিক্ট এম. কস্তা, সিএসসি-সহ আরো কয়েকজন, সবশেষে সিস্টার মেরী আশিস, এসএমআরএ, আমি, চয়ন এইচ. রিবেরু এবং প্যাট্রিক ডি’কস্তা পর্যায়ক্রমে ফাদার বেঞ্জামিনের ওয়াইসিএস বাহিনীর সদস্য ছিলাম।
ফাদার বেঞ্জামিনের সহযোগিতার মনোভাব ছিল এক কথায় অসাধারণ। ১৯৮৬ সালে ওয়াইসিএ ঢাকা এক্সিউিটিভ ও সেক্টর বোর্ড যখন গঠন করা হয়, আমি ছিলাম এর প্রথম কো-অর্ডিনেটর। এই বোর্ড কেন্দ্রীয় কর্মসূচী ছাড়াও নিজেদের প্রয়োজনানুসারে আরো কিছু নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতো। কারো কারো প্ররোচনায় উনি ভুল বুঝে আমাদের উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। ব্যাপারটা আমরা জানতাম। আমাদের নিজস্ব প্রায় সব আয়োজনেই চ্যাপলেইন হিসাবে ফাদারকে কোন না কোনভাবে আমন্ত্রণ জানাতাম, উনি কখনোই না করেন নাই। বিভিন্ন পরামর্শের জন্য গেলে সবচেয়ে ভালো পরামর্শটাই আমাদের দিয়েছেন।


একবার হলিক্রশ কলেজ অডিটরিয়ামে ঢাকা ওয়াইসিএস-এর এক আয়োজনে ভোর থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি। সকালে বিশেষ খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করার কথা ফাদার বেঞ্জামিনের। তাঁকে কনফার্ম করার জন্য ম্যাথিস হাউসে ফোন করলাম। ফাদার প্রথমেই আমাকে বললেন,‘এত বৃষ্টির মধ্যে লক্ষীবাজারের ছেলেমেয়েদের ফার্মগেট যেতে ঝামেলা হয়ে যাবে, আমি কলেজের গাড়ি নিয়ে আসছি।’ এলেন, আমাদের নিয়েও গেলেন।১৯৯০ সালে শুরুর দিকে স্বপন’দা ও সিঃ দীপ্তি রাঙ্গামাটি বা বান্দরবনে সেমিনার নিয়ে ব্যস্ত। ফাদার বেঞ্জামিন আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমরা কয়েকজন ফাদারের সাথে দেখা করলাম। তিনি বললেন,‘ওয়াইসিএস-এর দক্ষিণ এশীয় সম্মেলন শ্রীলংকাতে হওয়ার কথা, কিন্তু তাদের গৃহযুদ্ধের কারণে সেই সম্মেলন বাংলাদেশে করতে চাচ্ছে। তোমরা কি বল?’ ফাদারকে বললাম,“ফাদার, সম্মতি দিয়ে দেন। আমরা চ্যালেঞ্জটা নেবো।” তখনও আমার বয়স কুড়ি হয় নি। অথচ ফাদার আমাদের উপর ভরসা রাখলেন। ঢাকা ওয়াইসিএস-এর স্কুল সদস্য-সদস্যাদের নিয়ে আঙ্গুলে গোণা আমরা কয়েকজন এক্স-কো ও কয়েকজন এমিমেটর রিসেপসন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, এক্সপোজার ও সমাপনী অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করি। বাংলাদেশ ওয়াইসিএ-এর পক্ষে স্বাগতম বক্তব্য রাখে বাংলায় শিল্পী গ্লোরিয়া রোজারিও এবং ইংরেজীতে আমি। ফাদার বেঞ্জামিনের ভরসায় আমাদের সুপ্ত নেতৃত্ব ও প্রতিভা প্রকাশিত হ’ল। একই ব্যাপার আমি খেয়াল করেছি, তিনি যখন ম্যাথিস হাউসে গঠনগৃহের দায়িত্বে ছিলেন। সেমিনারিয়ানদের তিনি বিভিন্ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করতেন যাতে খ্রীষ্টীয় নেতৃত্বের বিকাশ হয়। আজ তাঁর সেমিনারীয়ানদের মধ্যে একজন আর্চবিশপ (প্রয়াত আর্চবিশপ মজেস), দুইজন বিশপ ও বেশ কয়েকজন ফাদার স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন। নির্ভরতা বা ভরসার মাধ্যমে অ-নে-ক নেতৃত্ব তৈরী করে গেছেন ফাদার বেঞ্জামিন।


১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং-এ ওয়াইসিএ এবং আইএমসিএস-এর চ্যাপলেইন-এনিমেটর ফরমেশন এ- একচেঞ্জ প্রোগ্রাম (CAFE) অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে ওয়াইসিএ-এর এনিমেটর হিসাবে সিঃ ফ্লোরেন্স, আইএমসিএস-এর পক্ষে সিঃ আশিস-এর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। পরে, ফাদার বেঞ্জামিন তাদের সাথে আমাকেও সেখানে পাঠান যেন ফিরে এসে আইএমসিএস শুরু করতে আমি সিঃ আশিসকে সহায়তা করতে পারি। স্বপন’দা ও সিঃ দীপ্তি সেবাদল থেকে চলে যাওয়ায় ওয়াইসিএস-এর জাতীয় পর্যায়ে একটা শূন্যতার সৃষ্টি  হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়া থেকে ফেরার পর ফাদার বেঞ্জামিন আমাকে জাতীয় পর্যায়ে ওয়াইসিএস-এর দায়িত্ব নিতে আমন্ত্রণ জানালে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি।


ফাদার বেঞ্জামিন-এর উৎসাহে সিঃ আশিস্ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। অনেক মিটিং, সিটিং-এর পর আইএমসিএস শুরু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রদের নিয়ে মি: নির্মল ড্যানিয়েল কস্তাকে আহ্বায়ক করে এড্হক কমিটি গঠন করা হয়। বাংলাদেশ কাথলিক স্টুডেন্টস্ মুভমেন্ট নাম প্রস্তাবনা নিয়ে ১৯৯১ সালের অক্টোবর মাসে ১ম জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। বিসিএসএম-এর প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন উইলিয়াম ব্রায়েন ডি’রোজারিও।


নব-কল্লোল ও যুবদৃষ্টি নামে দু’টি ত্রৈ-মাসিক পত্রিকা বের করতো কাথলিক যুব সেবাদল। আগে থেকে লেখা-লেখি ও সম্পাদনার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থাকলেও এর পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে নিয়মিতভাবে পত্রিকা দু’টি বের করার সময়। ফাঃ বেঞ্জামিন নিজে লেখালেখি করতে পছন্দ করতেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে লেখক হয়ে উঠতে পারে সেজন্য ক্ষেত্র হিসাবে নব-কল্লোল ও যুবদৃষ্টি নিয়মিত প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।নিঃসন্দেহে ফাদার বেঞ্জামিন-এর খুব যোগ্য ও দক্ষ একটা দল ছিল। তবে, তাদের কারো কারো মানসিকতা সৎ ও উদার ছিল না। তিনি সবাইকে খুব বিশ্বাস করতেন। ব্যস্ততার কারণে উনার পক্ষে সবকিছু প্রত্যক্ষভাবে দেখা বা করার সুযোগ ছিল না। তার দলের সদস্য সদস্যাদের চোখ দিয়েই বেশীরভাগ সময় প্রকৃত পরিস্থিতি বুঝতে হতো। তাদেরই কেউ কেউ কোন কোন বিষয়ে ফাদারকে ভুল তথ্য দিয়ে ভুলপথে পরিচালিত করেছে। যে কারণে ফাদারকে অন্যেরা, বিশেষভাবে যুবকসমাজ অনেকবার ভুল বুঝেছে। ১৯৮৯ সালে জাতীয় যুব দিবসের সময় আমি এ ধরণের ঘটনার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী। সেবাদলে যোগদানের পর এ বিষয়ে আমি ফাদারের সাথে সহভাগিতা করি- যাতে উনি আরো সতর্ক হতে পারেন।


সারা দেশে যুব কার্যক্রমে গতি আসায় ধর্মপ্রদেশীয় যুব সমন্বয়কারীগণ উপলব্ধি করতে শুরু করেন আরো বেশী করে আঞ্চলিক কর্মসূচী দরকার। বেশী কর্মসূচীর জন্য বেশী অর্থেরও প্রয়োজন, অথচ, সব ধর্মপ্রদেশের আর্থিক সংগতি এক রকম ছিল না। ১৯৯১ সালে রমনায় আমাদের যৌথ মিটিং-এ তৎকালীন খুলনা ধর্মপ্রদেশীয় যুব সমন্বকারী ফাঃ রমেন বৈরাগী(বর্তমানে বিশপ) বিষয়টা উপস্থাপন করলেন। ফাদার বেঞ্জামিন সমস্যাটা বুঝলেন, বুঝলেন আলাদাভাবে ধর্মপ্রদেশগুলোর কর্মসূচী চালু করতে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। যুব কর্মসূচী চালু রাখতে এবং অফিস স্টাফদের বেতন দিতে ফাদার বেঞ্জামিনকে বিভিন্নভাবে টাকার ব্যবস্থা করতে হতো। তাই, তিনি বিশপদের সাথে আলোচনা করে কাথলিক যুব সেবাদলকে পালকীয় যুব কমিশনে রূপান্তরের কাজ শুরু করেন।
১৯৯১ সালে শেষভাগে পবিত্র ক্রুশ সম্প্রদায়ের ভাইস-প্রভিন্সিয়াল হওয়ায় কাথলিক যুব সেবাদলের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব ১৯৯২ সাল থেকে ফাদার বকুল স্ট্যানিসলাস রোজারিও, সিএসসি-কে হস্তান্তর করতে হয়। ফাদার বকুল যাতে স্বাধীনভাবে, নিজের মনের মত সেবাদল সাজাতে পারেন, সেজন্য ফাদার বেঞ্জামিন তাঁর সাথে কাজ করা দলের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফাঃ বকুলকে নিজের মত সেবাদল সাজাতে বলেন। সবাইকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়াটা ফাদার বেঞ্জামিন-এর বিশেষ এক বৈশিষ্ট্য ছিল।
১৯৯২ সালে ঢাকা ওয়াইসিএস-এর ৫দিনের শেয়ারিং ক্যাম্প। যথারীতি উদ্বোধনী খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গের দায়িত্ব দিয়েছিলাম ফাদার বেঞ্জামিনকে। খ্রীষ্টযাগের সময় উনার অবজারভেশন থেকে আমাকে বললেন যেন চারজন ছেলের বিশেষ যত্ন নিই। আমাদের সবার চেষ্টায় সবচেয়ে দুষ্টু সেই চারজন ছেলে হয়ে গেল সবচেয়ে এ্যাকটিভ পারটিসিপেন্ট।


একদিনের প্রোগ্রামগুলো করতাম বিভিন্ন স্কুল-কলেজে সাপ্তাহিক/সরকারী ছুটির দিনে। সমস্যায় পড়তাম একাধিক দিনের ট্রেনিং বা অন্যান্য প্রোগ্রাম-এর সময়। কখন স্কুল-কলেজে পূজা, ঈদ বা গ্রীষ্মকালীন ছুটি হবে সেজন্য আমাদের বসে থাকতে হতো। ভাইস-প্রভিন্সিয়াল থাকা অবস্থায় তিনি ফাঃ বকুলকে একটি যুব কেন্দ্র তৈরীর জন্য জায়গা দেখতে বলেন। ফাঃ বকুল আমাদের নিয়ে বর্তমান ভাদুন যুব কেন্দ্রের জায়গা পছন্দ করেন এবং ফাদার বেঞ্জামিনকে জানান। অন্য কোন সোর্স থেকে সেন্টারের জন্য অর্থের ব্যবস্থা না হওয়ায় পবিত্র ক্রুশ সম্প্রদায় নিজেদের উদ্যোগে এই সেন্টার তৈরী করে। ফাদার বেঞ্জামিন তাঁর লক্ষ্যে স্থির ছিলেন বলেই আজকে এত বড় ও সুন্দর সেন্টার তৈরী করা সম্ভব হয়েছে।  যে কোন বড় কাজে অনেকের ভূমিকা থাকে, আমরা অনেক সময় উদ্যোক্তাকে ভুলে যাই।


ব্যক্তি জীবনে ফাদার বেঞ্জামিন ছিলেন অমায়িক, অসম্ভব ধৈর্যশীল, লক্ষ্যে স্থির। খ্রীষ্টীয় নেতৃত্ব তৈরীর প্রচেষ্টা সবসময় করে গেছেন এবং নিজেও নিজের মধ্যে খ্রীষ্টীয় নেতৃত্ব ধারণ করেছেন।পারিবারিক শিক্ষার কারণে আমি স্পষ্টভাষী ও উদ্যোগী। তাই বিভিন্ন বিষয়ে সহভাগিতার সময় আর্গুমেন্ট করেছি, অনেক সময় হয়তো প্রয়োজনীয় সৌজন্যবোধ নিয়ে ভাবি নি। বয়সের বিরাট ব্যবধান থাকা স্বত্বেও তিনি আমাকে বুঝতেন, প্রশ্রয় দিতেন এবং চ্যালেঞ্জ নিতে দিতেন।
আরো কিছু করতে না পারার আফসোস হয়তো ফাদার বেঞ্জামিন-এর ব্যক্তিগতভাবে থাকতে পারে। আরো কিছু তাঁর কাছ থেকে না পাবার আফসোস হয়তো আমাদের থাকতে পারে। তবুও আমি মনে করি, সময়ের সর্বোচ্চ সদ্বব্যবহার তিনি করেছেন। তাঁর জীবৎকালে যতটুকু করা সম্ভব ছিল তাঁর সবটুকুই তিনি করেছেন।---
ফাদার বেঞ্জামিনের আত্মার চির শান্তি কামনা করে বলতে চাই--
A light from our household is still present,
A voice we loved is still present,
A place we think is vacant- is not vacant
Because the place filled by him- that he committed for.
(১১ নভেম্বর, ২০১৭ খ্রীষ্টাব্দে সিবিসিবি সেন্টারে ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা'র স্মরণানুষ্ঠানে দেয়া আমার প্রদত্ত শ্রদ্ধার্ঘের পরিমার্জিতরূপ)