নিবেদিতা দে
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ আমার, তোমার,সবার প্রাণসখা,বন্ধু... "শুধু তোমার বাণী নয় গো হে বন্ধু হে প্রিয়,মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশ খানি দিও।" মনের কথা, প্রাণের মানুষই এমন করে বলতে পারেন।
সেই কোন ছোটবেলা থেকেই... "আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে," কিংবা "কাল ছিল ডাল খালি আজ ফুলে যায় ভরে.".. এমনি আরো কতকিছু শিখে বড় হয়ে ওঠা, তারপর বীরপুরুষ সেজে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করা।রবীন্দ্রসংগীত গাইবো, মায়ের কোন শাড়ি টা পরবো! মনে আনন্দ দোলা দিতো! শুরু হলো গান শেখা.. কবে দিদিমনি একটা নতুন রবীন্দ্রসংগীত দেবেেন সেই আশায়।
জীবন বয়ে চলে বহতা নদীর মতো। হাতে এলো গল্পগুচ্ছ.. বই পড়ার নেশায় মেতে গেলাম।একে একে পেলাম চোখের বালি, ঘরে বাইরে, শেষের কবিতা,অমিত আর লাবণ্যের অনন্ত প্রেম,এমন আরো অনেক কিছু। আরেকটি নেশা....,.. ভালো কোটেশন ডায়রি তে লিখে রাখা। "যার হৃদয় কোমল, যার প্রেম গভীর, তাকেই সমস্ত বেদনা বইতে হবে।" কতোটা অনুভবের ক্ষমতা শক্তি থাকলে এমন করে বলতে পারেন। তিনি যে অনেক বড় মাপের দার্শনিক ছিলেন একথা বলাই বাহুল্য। এই নরম মনের মানুষগুলো বেশি ঠকে, জীবনে কষ্ট পায় অনেক বেশি.. কেউ তাদের তেমন করে বোঝে না। আসলে মানুষ যা কষ্ট করে অর্জন করে, সেটাকেই পাওয়া বলে মনে করে তা যত সামান্য আর তুচ্ছ হোক। আর যা মানুষ না চাইতে এমনিতেই পেয়ে যায় তার মুল্য দেয় না তা যতই মুল্যবান জিনিস হোক, আর তা ভালোবাসাই হোক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবংস্বামী বিবেকানন্দের মতে মানুষ যে জিনিস সহজেই পেয়ে যায়, অবহেলা করে, মুল্য দেয় না, তাই মানুষের এতো কষ্ট, বেদনা। লিখতে গিয়ে কবির একটি প্রিয় গান মনে পড়ছে.. "না চাহিলে যারে পাওয়া যায়, তেয়া গিলে আসে হাতে দিবসে যে ধন হারায়েছি আমি, পেয়েছি আঁধার রাতে।। "
কতো গভীরতা ভাবনায়...অদ্ভুত মানুষের মন, না চাহিলে যারে পাওয়া যায় তাকে কি চাও না? দিবসে হারিয়ে তাকে পেলে আঁধার রাতে...... "অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো,সেই তো তোমার আলো! "তাই তো কবি আমার প্রাণসখা, আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে থাকা।আমার ছোট থেকে বড় হওয়া সবখানেতেই তুমি।
"তোমার আপন হাতে দোলে, দোলাও দোলাও দোলাও আমার হৃদয়।। "