রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

সুকুমার রায়ের ১৩৫তম জন্মদিন

রীতা আক্তার

প্রকাশিত: ১১:২৪, ৩১ অক্টোবর ২০২২

আপডেট: ১১:২৫, ৩১ অক্টোবর ২০২২

সুকুমার রায়ের ১৩৫তম জন্মদিন

শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়

প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক এবং উপমহাদেশের সাহিত্যে ‘ননসেন্স ছড়া’র প্রবর্তক সুকুমার রায়চৌধুরীর ৩০ অক্টোবর জন্মদিন। ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। সুকুমার রায় জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তার ছেলে খ্যাতিমান বাঙালি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়।সুকুমার রায়ের আদিনিবাস ছিল ময়মনসিংহ জেলার মসুয়ায়। তার বাবার নাম উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। কলকাতা সিটি স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা পাস করেন। পরে ১৯১১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়নে অনার্সসহ বিএসসি পাস করেন।

ফটোগ্রাফি ও প্রিন্টিং টেকনোলজিতে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গুরুপ্রসন্ন ঘোষ স্কলারশিপ’ নিয়ে বিলেতে যান। সেখানে তিনি প্রথমে লন্ডন এবং পরে ম্যানচেস্টারে স্কুল অব টেকনোলজিতে লেখাপড়া করেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় তিনি বিভিন্ন বিষয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।

রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লিখিত প্রবন্ধ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি বিলেতের বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা করার আমন্ত্রণ পান। ১৯১৩ সালে দেশে ফিরে তিনি বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইউ রায় অ্যান্ড সন্সে যোগ দেন।তিনি একাধিক গুণের অধিকারী ছিলেন। মুখে মুখে ছড়া রচনা ও ছবি আঁকার সঙ্গে ফটোগ্রাফির চর্চা এবং কলেজ জীবনে তিনি ছোটদের হাসির নাটক রচনা ও অভিনয় করতেন। তিনি শান্তিনিকেতনে একবার রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথের সঙ্গে ‘গোড়ায় গলদ’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন।

বাবার মৃত্যুর পর তিনি পিতৃপ্রতিষ্ঠিত ‘সন্দেশ’ পত্রিকা পরিচালনা ও সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। বিলেতে থাকা অবস্থায় তিনি এ পত্রিকার জন্য নিয়মিত গল্প, কবিতা ও নিজের আঁকা ছবি পাঠাতেন।তার প্রধান অবদান শিশু-কিশোর উপযোগী বিচিত্র সাহিত্যকর্ম। কবিতা, নাটক, গল্প, ছবি সব কিছুতেই তিনি সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ ও কৌতুকরস সঞ্চার করতে পারতেন। তার কাব্যে হাস্যরসের সঙ্গে সমাজচেতনাও প্রতিফলিত হয়েছে।

সুকুমারের লেখা কবিতার বই ‘আবোল-তাবোল’, গল্প ‘হ-য-ব-র-ল’, গল্প সংকলন ‘পাগলা দাশু’ এবং নাটক ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরী’ বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা ‘ননসেন্স’ ধরনের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়। কেবল ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ ইত্যাদি কয়েকটি মুষ্টিমেয় ধ্রুপদী সাহিত্যই যাদের সমকক্ষ। মৃত্যুর বহু বছর পরও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিকদের শীর্ষে রয়েছেন।

১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৭ বছর বয়সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন।


তথ্য:সংগৃহিত